[১০টি প্রশ্ন থেকে ৮টির উত্তর দিতে হবে, প্রতিটির মান- ৬]
প্রথম অধ্যায়
১। আমরা কিভাবে আমাদের স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপন করি?
উত্তর
: ২৬ মার্চ আমাদের মহান স্বাধীনতা দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়।
আমরা প্রতিবছর যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে মহান স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপন করি। যেমন—
(ক) প্রতিবছর ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে তোপধ্বনির মাধ্যমে দিনটি শুরু হয়।
(খ) রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ সর্বস্তরের
মানুষ জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
(গ) মসজিদ, মন্দির, গির্জাসহ
বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করা হয়।
(ঘ) রেডিও, টেলিভিশন বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করে
এবং সংবাদপত্রগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে।
(ঙ) এদিন থাকে সরকারি ছুটির দিন। অফিস-আদালত এবং বড় বড় রাস্তা জাতীয়
পতাকা দিয়ে সজ্জিত করা হয়।
২। মুক্তিযুদ্ধের তাৎপর্য ৫টি বাক্যে লেখো।
উত্তর: মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা পেয়েছি একটি
স্বাধীন দেশ। ফলে আমরা একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক। আমরা পেয়েছি একটি নির্দিষ্ট
ভূখণ্ড। আমরা পেয়েছি একটি নিজস্ব জাতীয় পতাকা। জাতি-ধর্ম-বর্ণ, নারী-পুরুষ-নির্বিশেষে
সবাই মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল বলে মুক্তিযুদ্ধ সবার। এই স্বাধীন দেশে সবার রয়েছে
সমান অধিকার এবং দেশটাকে সুন্দর করে গড়ে তোলার দায়িত্বও সবার।
দ্বিতীয় অধ্যায়
১। ব্রিটিশ শাসনের খারাপ দিক নিয়ে আলোচনা করো।
উত্তর : ব্রিটিশ শাসনের খারাপ দিকগুলো হচ্ছে
(১) ‘ভাগ করো শাসন করো’ নীতির ফলে এ দেশের মানুষের মধ্যে ধর্ম, বর্ণ,
জাতি ও অঞ্চলভেদে বিভেদ সৃষ্টি হয়।
(২) অনেক কারিগর বেকার ও অনেক কৃষক গরিব হয়ে যায় এবং বাংলায় দুর্ভিক্ষ
দেখা দেয়। এই ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ বাংলা ১১৭৬ সালে (ইংরেজি ১৭৭০) হয়েছিল, যা ‘ছিয়াত্তরের মন্বন্তর’ নামে পরিচিত।
(৩) অল্পসংখ্যক জমিদার শ্রেণি অনেক জমির মালিক হয় এবং বাংলার সংখ্যাগরিষ্ঠ
মানুষ গরিব হয়ে যায়।
২। বাংলার নবজাগরণে কারা অবদান রেখেছেন?
উত্তর : উনিশ শতকে বাংলায় নবজাগরণ ঘটে। যার ফলে
সামাজিক সংস্কারসহ শিক্ষা,
সাহিত্য ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের ব্যাপক প্রসার ঘটে।
নবজাগরণে অবদান রেখেছিলেন—রাজা
রামমোহন রায়, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, মাইকেল মধুসূদন দত্ত প্রমুখ। আর মুসলমানদের সামাজিক সংস্কার ও আধুনিক
শিক্ষার প্রসারে বিশেষ ভূমিকা রাখেন স্যার সৈয়দ আহমদ খান, নবাব আবদুল লতিফ সৈয়দ আমির আলী, বেগম রোকেয়া
প্রমুখ।
তৃতীয় অধ্যায়
১। বাংলাদেশের প্রাচীনতম বৃহৎ নগরের ধ্বংসাবশেষ কোথায় রয়েছে?
উত্তর : বাংলাদেশের একটি বিশেষ ঐতিহাসিক স্থান মহাস্থানগড়। খ্রিস্টপূর্ব চার শতক থেকে পরবর্তী পনেরো শত বছরের বেশি সময়কালের বাংলার ইতিহাসের সাক্ষ্য বহন করে এটি। এখানে বাংলাদেশের প্রাচীনতম ও বৃহৎ নগর 'পুণ্ড্রনগর'-এর ধ্বংসাবশেষ আছে। এ নগর মৌর্য আমলে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এটি বগুড়া শহর থেকে ১৩ কিলোমিটার উত্তরে করতোয়া নদীর পশ্চিম তীরে অবস্থিত।
২। মহাস্থানগড়ের দুর্গে কী রয়েছে?
উত্তর : মহাস্থানগড়ে প্রাচীনকালের একটি দুর্গ ভাঙা অবস্থায় এখনো দেখতে পাওয়া যায়। দুর্গটির পূর্বদিকে করতোয়া নদী এবং অন্য তিন দিকে চওড়া খাদের চিহ্ন রয়েছে। দুর্গের ভেতর এখানে-সেখানে অনেক পাথরের খণ্ড রয়েছে। পাওয়া গেছে 'খোদাই পাথর' নামে পরিচিত এক টুকরা বিশেষ ধরনের পাথর। এই পাথর টুকরাটি প্রায় ৩.৩৫ মিটার লম্বা ও ০.৯১ মিটার চওড়া।
৩। ওয়ারী-বটেশ্বরে কী কী ঐতিহাসিক নিদর্শন পাওয়া গেছে?
উত্তর : নরসিংদী জেলার ওয়ারী ও বটেশ্বর নামে দুটি পাশাপাশি গ্রামে কয়েক বছর আগে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নস্থলের সন্ধান পাওয়া গেছে। এটি 'ওয়ারী-বটেশ্বর' নামে পরিচিত। এটি বাংলার একটি সুপ্রাচীন ঐতিহাসিক নিদর্শন। ধারণা করা হয়, চার খ্রিস্টপূর্ব অব্দে মৌর্য যুগে এখানে একটি সভ্যতার যাত্রা শুরু হয়। এখানকার কয়েক কিলোমিটার বিস্তৃত এলাকায় ছাপাঙ্কিত মুদ্রা পাওয়া গেছে। এ ছাড়া পাথরের অনেক হাতিয়ার ও গুটিকা পাওয়া গেছে।
৪। পাহাড়পুরে কোন আমলের প্রত্নস্থলের সন্ধান পাওয়া গেছে?
উত্তর : পাহাড়পুর রাজশাহী বিভাগের নওগাঁ জেলার বদলগাছী উপজেলায় অবস্থিত। এখানে পাল বংশের রাজাদের আমলের প্রত্নস্থলের সন্ধান পাওয়া গেছে। এ প্রত্নস্থলটি প্রায় ২৪ মিটার উঁচু এবং ০.১০ বর্গকিলোমিটার বা ১০ হেক্টর এলাকাজুড়ে বিস্তৃত। পাহাড়পুরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পুরাকীর্তিটি 'সোমপুর মহাবিহার' নামে পরিচিত।
৫। ময়নামতিতে প্রাপ্ত পাঁচটি প্রত্নস্থলের নাম লেখো।
উত্তর : কুমিল্লা শহর থেকে আট কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে ময়নামতি অবস্থিত। রাজা মানিকচন্দ্রের স্ত্রী ময়নামতির কাহিনী এ জায়গার সঙ্গে জড়িত। এখানকার প্রত্ন নিদর্শনগুলো আট থেকে বারো শতক পর্যন্ত প্রায় চার শত বছরের দক্ষিণ-পূর্ব বাংলার ইতহাস বহন করে। এখানে প্রাপ্ত পাঁচটি প্রত্নস্থলের নাম হলো- (১) শালবন বিহার, (২) আনন্দ বিহার, (৩) ভোজ বিহার, (৪) রানির বাংলো ও (৫) ময়নামতি ঢিবি।
চতুর্থ অধ্যায়
প্রশ্ন : বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে কৃষি আমাদের কিভাবে সহায়তা করে?
উত্তর
: বাংলাদেশ বিভিন্ন কৃষিপণ্য বিদেশে রপ্তানি করে প্রচুর
বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে থাকে।
বাংলাদেশ
একটি কৃষিপ্রধান দেশ। এখানে নানা ধরনের কৃষিপণ্য উত্পাদন করা হয়। এগুলোর মধ্যে
খাদ্যশস্য হিসেবে ধান, গম, ডাল,
আলু, মসলা এবং অর্থকরী ফসল হিসেবে পাট,
চা, তামাক উল্লেখযোগ্য। এসব কৃষিপণ্যের
মধ্যে কতগুলো পণ্য নিজেদের দেশের চাহিদা পূরণের পর বিদেশে রপ্তানি করা হয়। আর এর
মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়। এভাবেই কৃষি আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে সহায়তা
করে।
প্রশ্ন : আমাদের পোশাকশিল্পের কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক বর্ণনা করো।
উত্তর
: অন্যতম প্রধান শিল্প হলো পোশাকশিল্প। এ শিল্পের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো হলো—
১.
বাংলাদেশের মোট রপ্তানি আয়ের বেশির ভাগ আসে তৈরি পোশাক রপ্তানি করার মাধ্যমে।
২.
বাংলাদেশের পোশাক কারখানায় লাখ লাখ নারী-পুরুষ কাজ করে।
৩.
তাদের তৈরি পোশাক বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করে বাংলাদেশ প্রতিবছর অনেক বৈদেশিক মুদ্রা
অর্জন করে।
৪.
পোশাকশিল্পে কাজ করার ফলে এ দেশের অনেক নারী আত্মনির্ভরশীল হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে।
৫.
পোশাকশিল্পে কাজ করার ফলে এ দেশের মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হচ্ছে।
তাই
বলা যায়,
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নতিতে এ দেশের পোশাকশিল্পের ভূমিকা
অপরিসীম।
প্রশ্ন : বৃহৎ শিল্প ও ক্ষুদ্র শিল্প সম্পর্কে আলোচনা করো।
উত্তর : বৃহৎ শিল্প ও ক্ষুদ্র শিল্প বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বৃহৎ শিল্প ও ক্ষুদ্র শিল্প সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হলো—
বৃহৎ শিল্প :
১. যেসব শিল্পপ্রতিষ্ঠান বিপুল মূলধন, অনেক শ্রমিক, আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে দ্রব্যসামগ্রী উত্পাদন করে সেগুলোকে বৃহৎ শিল্প বলে।
২. বৃহৎ শিল্পের আয়তন ক্ষুদ্র শিল্প থেকে অনেক বড় হয়।
৩. বৃহৎ শিল্পের দ্রব্যসামগ্রী বড় বড় কারখানায় তৈরি হয়।
৪. বৃহৎ শিল্পে বিপুল পরিমাণ মূলধন বিনিয়োগ করা হয়।
৫. বাংলাদেশের বৃহৎ শিল্পের মধ্যে সার শিল্প, সিমেন্ট শিল্প, ওষুধ ও কাগজ শিল্প উল্লেখ্যযোগ্য।
ক্ষুদ্র শিল্প :
১. যেসব শিল্পপ্রতিষ্ঠান অল্পসংখ্যক শ্রমিক, হালকা যন্ত্রপাতি ব্যবহার দ্বারা দ্রব্যসামগ্রী উত্পাদন করে সেগুলোকে ক্ষুদ্র শিল্প বলে।
২. ক্ষুদ্র শিল্পের আয়তন ক্ষুদ্র হলেও তা কুটির শিল্প থেকে বড় হয়।
৩. ক্ষুদ্র শিল্পের দ্রব্যসামগ্রী ছোট ছোট কারখানায় তৈরি হয়।
৪. ক্ষুদ্র শিল্পে অপেক্ষাকৃত কম মূলধন বিনিয়োগ করা হয়। তবে তা কুটির শিল্প থেকে বেশি।
৫. বাংলাদেশের ক্ষুদ্র শিল্পের মধ্যে সাবান শিল্প, রেশম শিল্প ইত্যাদি উল্লেখ্যযোগ্য।
৪। বাংলাদেশের প্রধান ফসল কোনটি? উক্ত ফসলটি কেন প্রধান ফসল হিসেবে বিবেচিত? ফসলটি সম্পর্কে ৩টি বাক্য লেখো।
উত্তর : বাংলাদেশের প্রধান ফসল ধান।
ভাত এ দেশের মানুষের প্রধান খাদ্য হওয়ায় ধান প্রধান ফসল হিসেবে বিবেচিত।
ধান সম্পর্কে ৩টি বাক্য—
১. বাংলাদেশের প্রায় সব অঞ্চলের জলবায়ু ও অগভীর জলাভূমি ধান চাষের উপযোগী।
২. ধান এ দেশের প্রধান খাদ্যশস্য।
৩. বাংলাদেশে প্রধানত আউশ, আমন ও বোরো—এই তিন ধরনের ধান চাষ হয়।
পঞ্চম অধ্যায়
১। পরিবারের ওপর অধিক জনসংখ্যার তিনটি প্রভাব উল্লেখ করো।
উত্তর : অধিক জনসংখ্যা আমাদের জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রভাব সৃষ্টি করে। পরিবারের ওপর অধিক জনসংখ্যার তিনটি প্রভাব হলো—
১) খাদ্য ঘাটতি দেখা যায়।
২) সবার জন্য প্রয়োজন মতো কাপড় কেনা সম্ভব হয় না।
৩) সবার জন্য ভালো বাসস্থানের সুবিধা করা যায় না।
২। সমাজের ওপর অধিক জনসংখ্যার তিনটি প্রভাব উল্লেখ করো।
উত্তর : জনসংখ্যা বাড়লে সমাজের ওপর অনেক ক্ষেত্রে এর প্রভাব পড়ে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য তিনটি প্রভাব হলো—
১) অধিক জনসংখ্যার জন্য শিক্ষা নিশ্চিত করা কঠিন কাজ। তাই আমাদের মোট জনসংখ্যার ৩৫ শতাংশ এখনো অক্ষরজ্ঞানহীন। দারিদ্র্যের কারণে অনেক শিশু বিদ্যালয়ে যেতে পারে না। আবার কোনো কোনো শিশু বিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও পরিবারকে কাজে সাহায্য করতে গিয়ে লেখাপড়া শেষ না করে ঝরে পড়ে।
২) জনসংখ্যার তুলনায় চিকিৎসক কম হওয়ায় জনগণ চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। স্বাস্থ্যহীনতার কারণে উপার্জন করতে না পারায় অনেকেই অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারছে না।
৩) অধিক জনসংখ্যার বাসস্থানের জন্য ঘরবাড়ি নির্মাণে গাছপালা কাটতে হচ্ছে। এতে পরিবেশ ও জলবায়ুর ওপর প্রভাব পড়ছে।
৩। জনসংখ্যা সমস্যার পাঁচটি সমাধান লেখো।
উত্তর : অধিক জনসংখ্যা বাংলাদেশের একটি প্রধান সমস্যা। জনসংখ্যা সমস্যার পাঁচটি সমাধান লেখা হলো—
১) শিক্ষা : শিক্ষা বিস্তার করলে এবং শিক্ষার মান বাড়ালে জনসংখ্যা জনসম্পদে পরিণত হবে।
২) পরিবেশ : পরিবেশদূষণ রোধ করতে পারলে মানুষের জীবনযাপনের মান বৃদ্ধি পাবে।
৩) স্বাস্থ্য : রোগ প্রতিরোধে বিভিন্ন টিকা ও স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে সরকারি সহায়তা বাড়াতে হবে। এতে মানুষের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
৪) বাসস্থান : গৃহনির্মাণে সরকারি সাহায্য বাড়াতে হবে, যাতে মানুষের বাসস্থানের সুবিধা নিশ্চিত হয়।
৫) দক্ষতার উন্নয়ন : কারিগরি শিক্ষার উন্নয়ন করতে হবে, যাতে আমাদের শিল্পের প্রসার ঘটে।
ত্রয়োদশ অধ্যায়
প্রশ্ন : জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ সদস্য
দেশগুলোর উন্নয়নে কী কাজ করে?
উত্তর : জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক
পরিষদের কাজ হলো বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করা। এ
লক্ষ্যে সংস্থাটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিভিন্ন
কার্যক্রম পরিচালনা করে। বেকার সমস্যার সমাধান, নিরক্ষরতা
ও দারিদ্র্য দূরীকরণ, শিশু অধিকার ও মানবাধিকার সংরক্ষণ,
নারীসমাজের উন্নয়ন ইত্যাদি এ পরিষদের অন্যতম কাজ।
প্রশ্ন : আন্তর্জাতিক আদালতের কাজ কী?
উত্তর : জাতিসংঘের সদস্যভুক্ত কোনো
রাষ্ট্র অন্য রাষ্ট্রের সঙ্গে সীমানাসহ অন্য যেকোনো বিরোধ মীমাংসার জন্য এ আদালতে
বিচার চাইতে পারে। আন্তর্জাতিক আদালত এ বিষয়ে যে রায় দেয় রাষ্ট্রগুলো তা মেনে নেয়।
আন্তর্জাতিক আদালত মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের সমুদ্র সীমানাসংক্রান্ত একটি
বিরোধের রায় দেয় ২০১২ সালে। ফলে বঙ্গোপসাগরে একটি বিরাট অংশের ওপর বাংলাদেশের অধিকার
প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
প্রশ্ন : জাতিসংঘের কোন সংস্থাটি শিশুদের জন্য কাজ
করে? এর কাজের বর্ণনা দাও।
উত্তর : ইউনিসেফ বিশ্বের শিশুদের উন্নয়নে
কাজ করে। এর পুরো নাম জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক শিশু তহবিল। সংক্ষেপে একে বলা হয়
জাতিসংঘ শিশু তহবিল বা ইউনিসেফ। যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে এর সদর দপ্তর অবস্থিত।
বাংলাদেশসহ আরো অনেক দেশে এর কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে।
ইউনিসেফ শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষা, গ্রামে
বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ, স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা তৈরি,
মা ও শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষা, শিশুদের
বিভিন্ন প্রতিষেধক টিকাদান ইত্যাদি কাজ করে। বিশ্বের শিশুদের অধিকার রক্ষায়
ইউনিসেফ সজাগ দৃষ্টি রাখে।
বাংলাদেশে ইউনিসেফের সহায়তায় শিশুর জন্য কল্যাণমূলক
অনেক কাজ পরিচালিত হচ্ছে। মা ও শিশুর স্বাস্থ্যসেবা, শিশুদের বিভিন্ন সংক্রামক
রোগ থেকে রক্ষা করা, শিশুদের পুষ্টিহীনতা দূর করা এবং
শিশুর শিক্ষা নিশ্চিত করাসহ বিভিন্ন কাজে ইউনিসেফ সহায়তা করে।
প্রশ্ন : সার্ক ও জাতিসংঘের উদ্দেশ্যের পার্থক্য
লেখো।
উত্তর : সার্ক ও জাতিসংঘের উদ্দেশ্যের মধ্যে কিছু
পার্থক্য রয়েছে। সেগুলো হলো-
(ক) সার্ক একটি আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা। অপরপক্ষে, জাতিসংঘ একটি আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা।
(খ) সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করাই হলো
সার্কের প্রধান উদ্দেশ্য। অপরপক্ষে, বিশ্বে শান্তি
প্রতিষ্ঠা করাই হলো জাতিসংঘের প্রধান উদ্দেশ্য।
(গ) সার্ক সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে ভ্রাতৃত্ব ও সম্প্রীতি স্থাপন করে।
অন্যদিকে, জাতিসংঘ বিভিন্ন জাতি তথা দেশের মধ্যে সম্প্রীতি
স্থাপন করে।
(ঘ) সার্ক সদস্য দেশগুলোর অর্থনৈতিক, সামাজিক ও
সাংস্কৃতিক অবস্থার দ্রুত উন্নয়ন করে। অন্যদিকে, জাতিসংঘ
অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশের
মধ্যে সহযোগিতা গড়ে তোলে।) সার্ক সদস্য দেশগুলোকে বিভিন্ন বিষয়ে আত্মনির্ভরশীল হতে
সাহায্য করে। অন্যদিকে, জাতিসংঘ বিভিন্ন দেশের মধ্যে
বিদ্যমান বিবাদ মীমাংসা করে।
0 Comments