ভূমিকা: ভোরে পাখির গানেই আমাদের ঘুম ভাঙে। এদের মধ্যে দোয়েল অন্যতম। এটি আমাদের জাতীয় পাখি। বসন্তে একটানা দোয়েলের মিষ্টি গান আমাদের মাতোয়ারা করে তোলে। বাংলাদেশের প্রাকৃতিক পরিবেশে দোয়েল সবচেয়ে মানানসই পাখি বলেই একে আমাদের জাতীয় পাখির মর্যাদা দেওয়া হয়েছে।

বাসস্থান: দোয়েল কখনো গভীর জঙ্গলে অথবা একেবারে খোলামেলা জায়গায় বাস করে না। লোকালয়ের কাছাকাছি, বৈঠকখানা বা ঘরের পাশে, উঠোনের কোণে ছোট্ট ঝোপঝাড়ে বাস করে।

আকৃতি: দোয়েল একটি ছোট্ট পাখি। এটি আকারে ছয় ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়। এর দুটি পা, দুটি পাখা, দুটি চোখ, দুটি কান ও দুটি ঠোঁট আছে। দোয়েল একটি সুন্দর পাখি। এর মতো এত রূপের সমাবেশ অন্য পাখির মধ্যে সচরাচর দেখা যায় না। পুরুষ ও স্ত্রীভেদে দোয়েল পাখির রঙে একটু প্রভেদ দেখা যায়। পুরুষ দোয়েলের গলা, মাথা, বুক ও পিঠ মিছমিছে কালো। তবে লম্বাটে সাদা সাদা দাগ আছে। লেজের পালকটিতে রয়েছে সাদা এবং কালো রঙের মিশেল। স্ত্রী দোয়েলের রং অনেকটা বাদামি ও ধূসর। এদের ঠোঁট কালো।

প্রকৃতি: বাংলার গানের পাখি এই দোয়েল। কিন্তু এরা সারা বছর গান করে না। শীতের শেষে বসন্তের আগমনে তারা গানের জন্য প্রস্তুত হয়। গান করার সময় এরা সাধারণত নড়াচড়া করে না এবং একটানা অনেকক্ষণ ধরে গান করে। দোয়েল খুব শান্ত প্রকৃতির প্রাণি। দোয়েলকে সারা বছরই দেখা যায়। এটি আমাদের সবচেয়ে পরিচিতি পাখি।

খাদ্যাভ্যাস: দোয়েল প্রায় বাগানবাড়ি বা ঘরের আশপাশে খোলা জায়গায় ঘাসের ওপর বিচরণ করে। ঘাসের ওপর ছড়ানো শস্যকণা বা ছোট ছোট পোকামকড় খেয়ে বেঁচে থাকে।

উপসংহার: গানের পাখি হিসেবে এটি বাংলাদেশের কবি-সাহিত্যিকদের নিকট প্রিয়। বিভিন্ন দিক থেকে দোয়েল আকর্ষণীয় বলেই দোয়েলকে বাংলাদেশের জাতীয় পাখির মর্যাদা দেওয়া হয়েছে।